AHMnewsTeam ::: দুধসাগর, দুধস্বর বা দুধকশি- একটি ঔষধি গুল্ম। গাছটির পুরো শরীর সাদা তরল পদার্থ বা দুধে ভরপুর। গাছটির যে কোনো জায়গায় একটু চিমটি কাটলেই সাদা তরল আঠালো রস বের হয়ে আসে। আর এই জন্য গাছটির নাম দুধসাগর। তবে কেউ কেউ এর নাম দেন দুধস্বর। সাধারণত বরেন্দ্র অঞ্চলের যে কোনো শুষ্ক বা আর্দ্র বেলে দো-আঁশ মাটি, রোদ বা ছায়াযুক্ত, স্যাঁতস্যাঁতে সব ধরনের মাটিতেই দুধসাগর গাছ জন্মায়।
দুধসাগর গাছটি ডাটাযুক্ত, গাছটির উচ্চতা সাধারণত ৮/১০ ফুট লম্বা, গাছটির আকৃতি ঝোপ জাতীয়, এই গাছের কোন পাতা নেই, তবে গাছটির গায়ের আবরণ একটু খসখসে, গাছটির শাখাপ্রশাখাগুলো ঘন সবুজ রঙের । এই গাছে কোনো প্রকার ফুল বা ফল দেখা যায় না । এই গাছের ডাটাগুলোর অগ্রভাগ ঝোপ প্রকৃতির হয়ে থাকে। দুধসাগর গাছের ডাটাগুলো এক প্রকারের গন্ধ আছে, আর এই গন্ধের কারণে গরু -ছাগল সহজে নষ্ট করতে পারে না। গাছটির গোড়া বা শিকড় মাটির গভীরে থাকে। গাছটি ডাল বছরের যে কোন সময় লাগানো যায়। এই গাছটি লাগানোর জন্য নিদির্ষ্ট কোন জায়গায় লাগে না, বাড়ির আশেপাশে বা পুকুর পাড়ে লাগানো যায়। গাছটির ডাল লাগানোর ১০/১৫ দিনের মধ্যেই ডালে কুশি গজায়। গাছটির বাড়ন্ত এমন যে বছরে দুই বার ডাল ছেঁটে দিতে হয় ।
দুধসাগর গাছের কিছু ওষুধি গুণাগুণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: গৃহপালিত পশুর দুধজ্বর, দুধহীনতা ও ওলান ফোলা রোগের সমস্যা দুধসাগর বেশ কার্যকর। গাছের কচি ডালগুলো টুকরো টুকরো করে কেটে খড়ের সাথে একত্রে মিশে খাওয়ালে উপকার পাওয়া যায়। তাছাড়া এই গাছের ডাটা টুকরো করে কেটে বাঁশের পাতা, কলা পাতার সাথে জড়িয়ে খাওয়াতে হবে। তবে সকালে খালি পেটে খাওয়ালে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
গবাদি পশুর উপকারের পাশাপাশি এই গাছ মানুষেরও উপকারে আসে। গ্রাম অঞ্চলে অনেক মায়ের দুধের ঘাটটি দেখা দিলে এটি খাওয়ানো যেতে পারে। অনেকে দুধসাগরের কচি ডাল রান্না করে খেয়ে থাকেন। শিং, মাগুর, কৈ, ফলি, টাকি মাছের সাথে ডাটাগুলো টুকরো করে কেটে রান্না করে ঝোল খেলে মায়ের দুধের ঘাটটি পূরণ হয় বলে অনেকের ধারনা। দিনে দিনে হারিয়ে যেতে বসেছে নানা গুন সম্পন্ন দুধস্বর গাছ। এসব ঔষধি গাছের চাহিদা তুলনামূলক অন্যান্য গাছের চেয়ে একটু বেশি।
_____________________________________________
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন