এ এইস মির্জা :: আজ ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারদের কবল থেকে বিহারি অধ্যুষিত বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন মুক্ত করে বীর মুক্তিযোদ্ধারা। বিহারি অধ্যুষিত শহর হওয়ায় সহজেই পাকিস্তানি সেনারা সান্তাহারে শক্ত ঘাঁটি স্থাপন করে। এ শহর থেকেই পাকিস্তানি সেনারা উত্তরাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতো।
সান্তাহারে পাকিস্তানি হানাদারদের নির্মম অত্যাচারের পাশাপাশি বিহারিদের অত্যাচারও সীমা ছাড়িয়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ ৯ মাস সান্তাহার শহরে বিহারিরা কোনো বাঙালিকে ঢুকতে দেয়নি। এ সময় বাঙালি গ্রামগুলোতে বিহারিরা ইচ্ছেমতো লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ চালিয়েছে।
১০ ডিসেম্বর থেকে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এ কে এম ফজলুল করিম, নজরুল ইসলাম, মুনছুর, এল কে আবুল হোসেনসহ অন্যান্য কমান্ডারের নেতৃত্বে প্রায় ৪ শতাধিক গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সান্তাহারের উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে অবস্থান নেন। এরপর খণ্ড খণ্ড ভাবে সান্তাহার শহরে অবস্থিত পাকিস্তানি হানাদারদের তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। তিন দিকের রেললাইন উপড়ে ফেলে হানাদারদের যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন করে দেয় গেরিলা যোদ্ধারা।
১২ ডিসেম্বর কায়েতপাড়ার নিকট রেললাইন উপড়ে ফেলতে গিয়ে শহীদ হন বীরমুক্তিযোদ্ধা সুজিত। ১৪ ডিসেম্বর তিন দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রচণ্ড আক্রমনের মুখে পাকিস্তানি হানাদাররা সান্তাহার ছেড়ে নওগাঁ জেলা হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৯ মাস যুদ্ধের পর আজকের এই দিনে সান্তাহার শহরে বিজয়ের পতাকা উড়ান এদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন