AHM News
🔹জেনে নিই চর্ম রোগ ও ত্বকের কিছু সমস্যা🔹
ছোট বাচ্চার এক্সিমা থেকে যুববয়সীর এবং হাতপায়ের দাদ থেকে রোদে ফুসকুড়িসহ প্রতিটি মানুষ সারা জীবনে কোন না কোন চর্মরোগে আক্রান্ত হতে পারে। বেশির ভাগ চর্ম রোগ তেমন গুরুতর না হলেও রোগটি সবার জন্য নানা অসুবিধা ও কষ্ট সৃষ্টি করতে পারে । চর্মরোগ এমন একটি সাধারণ ও প্রচলিত ব্যাধি যা মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন কুষ্ঠ,খোস, ছত্রাক ব্যাধি এবং চর্মজীবাণু প্রদাহ । ভেতর ও বাইরের উপাদানের প্রভাবে প্রভাবিত হওয়ার পর মানুষের চর্মের আকার,গঠনপ্রণালী এবং ক্ষমতার পরিবর্তন হতে পারে। কোনো কোনোটার রোগবিদ্যাগত প্রক্রিয়ায় নানা লক্ষণ দেখা দেয়।
চর্মরোগ সহজে পুনরায় ঘটতে পারে এবং বিশেষ করে বসন্তকাল ও শীতকালে সহজে আবার দেখা দিতে পারে বা গুরুতর হতে পারে । পক্ষান্তরে গ্রীষ্মকাল ও শরত্কালে এ রোগ কিছুটা হালকা হতে পারে। চর্মরোগের হার বেশি হলেও অপেক্ষাকৃত হালকা হয় বলে রোগটি সাধারণত মানুষের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু অল্প কিছু চর্মরোগ অপেক্ষাকৃত গুরুতর এমনকি প্রাণহানি ঘটাতে পারে । সাধারণভাবে বলতে গেলে চুলকানোর চর্মরোগের অর্ধেকেরও বেশি এলার্জির সঙ্গে সম্পর্কিত। আর ব্যথা হয় এমন চর্মরোগের বেশির ভাগ জীবাণু ও ভাইরাসে প্রদাহের সঙ্গে সম্পর্কিত।
চিকিৎসা নেয়ার সময় অনেক রোগী জানতে চান যে,নিজের রোগ সংক্রামক রোগ কিনা এবং তার ছড়িয়ে পড়ার আশংকা আছে কিনা ।আসলে চর্মরোগেরমধ্যে সংক্রামক চর্মরোগের অনুপাত অতি অল্প। সংক্রামক চর্মরোগের মধ্যে রয়েছে হার্পিজ, ভারিসেলা, বসন্ত, হাম,স্কার্লেট জ্বর, কুষ্ঠ, হাতপায়ে দাদ এবং খোস ইত্যাদি।
চর্মরোগের ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংস্পর্শে ছড়ানো দু ধরণে বিভক্ত। প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে ছড়িয়ে পড়ার অর্থ হল, সরাসরি রোগী বা রুগ্নপশুর চামড়া, রক্ত, দেহনিঃসৃত তরল পদার্থ ও নিঃসৃত পদার্থের সংষ্পর্শে ছড়ানো । পরোক্ষ ছড়িয়ে পড়ার অর্থ হল রোগীর ব্যবহার করা দ্রব্যের মাধ্যমে ছড়ানো।
সংক্রামক উত্সের সঙ্গে যাদের সংস্পর্শ হয় তারা সবাই রোগে আক্রান্ত হতে পারে তা নয়,কারণ মানুষের শরীরের প্রতিরোধ শক্তি রয়েছে। প্রতিরোধ শক্তি হ্রাসের সময়,যেমন শরীর দুর্বল,অন্ত্রের দীর্ঘকালীন ব্যাধি, দীর্ঘকাল ধরে প্রতিরোধ শক্তি রোধের ঔষধ হর্মোন ব্যবহার এবং টিউমারসহ নানা অবস্থায়ই কেবল সংক্রামিত হওয়ার আশংকা বাড়তে পারে। তাই চর্মরোগে আক্রান্ত হওয়া আতঙ্কের ব্যাপার নয়। কিন্তু কেউকেউ মনে করেন, চর্মরোগ ছোট রোগ বা গুরুতর রোগ । ডাক্তার যে ঔষধ খাওয়ান এবং নিজেরাই যে ঔষধ কিনেছেন তার কোনো পার্থক্য নেই আর কিছু চর্মরোগ সম্পর্কে ডাক্তারের কিছু করার নেই বলে হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর দরকার। যথাসময় এর চিকিৎসা না করালে জ্বর, ঘাম,ঝিমঝিম বা অবসন্নতার ভাব,বমির ভাব, বাতের ব্যথা ও ক্লান্তিসহ ধারাবাহিক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে এমনকি সারা শরীর পচে মৃত্যু হতে পারে।
কেন চর্মরোগকে গুরুত্ব দেয়া উচিত তা সম্পর্কে ডাক্তার শি বলেন, ত্বক মানুষের কয়েকটি বড় অঙ্গ বা অবয়ব নিয়ে গঠিতঃ
(১) ত্বক একটি স্পর্শানুভূতির অঙ্গ।
(২) ত্বকের গঠন ও শারিরীক ক্ষমতার দিক থেকে বলতে গেলে সেটি একটি রোগ।
(৩) ত্বক একটি মেটাবলিজম অঙ্গ যা ঘাম নিঃসরণ করে এবং দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।
(৪) ত্বক একটি প্রতিরক্ষামূলক দেয়াল । সুতরাং চর্মরোগ হলে স্বাভাবিকভাবে চিকিত্সা করাতে হবে। চর্মরোগ বা ত্বকের সমস্যা বাংলাদেশের বস শ্রেণীর মানুষের জন্য সাধারণ সমস্যা। যারা বেশী অপরিষ্কার, অপরিছন্ন, ঘনবসতিপূর্ণ পরিবেশে থাকে ও নিজেও অপরিচ্ছন্ন থাকে তাদের ক্ষেত্রে ত্বকের সমস্যা বেশী দেখা দেয়। কয়েকটি সাধারণ চর্মরোগ হচ্ছে–পাঁচড়া, খঁজলি ও দাদ ।
পাঁচড়ায় যে সব জায়গা আক্রান্ত হয় :
শিশুদের মধ্যে এই রোগ বেশী দেখা যায় ।
আঙ্গুলের মাঝখানে, কব্জিতে, কোমরের চারদিকে, যৌনাঙ্গের আশেপাশে, শরীরের অন্যান্য অংশেও ছোট ছোট ফুঁসকুড়ি দেখা যায়।
চর্ম রোগের লক্ষণ:
আক্রান্ত স্থানে সবসময় চুলকানীর ভাব অনুভূতি হয়, না চুলকিয়ে থাকা যায় না, চুলকাতে চুলকাতে চামড়া উঠে যায়, ফুসকুড়ি গুলোতে পুঁজ/পানি জমে, পুনরায় চুলকালে পুঁজ ছড়িয়ে পড়ে ও চুলকানী অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে যায়,
ব্যথায় শরীরে জ্বর আসে।
প্রাথমিক চিকিৎসা :
পরিষ্কার পরিছন্ন কাপড় চোপড় ব্যবহার করলে খোসপাঁচড়া হবে না, প্রতিদিন গোসল করতে হবে, গরম পানি দিয়ে গোসল করতে হবে,
গরম পানিতে নিম পাতা দিয়ে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলেও উপকার পাওয়া যাবে, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হবে। অনুগ্রহ করে পোস্টটি শেয়ার করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন