Pages

রবিবার, ৯ আগস্ট, ২০২০

বগুড়ার সান্তাহারে চামড়া নিয়ে মহাজনদের অপেক্ষায় আড়তদাররা

 

নিজস্ব প্রতিনিধি,আদমদীঘি বগুড়াঃ
বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার পৌর শহরের চামড়া গুদাম এলাকার আড়তগুলোতে কোরবানির পশুর চামড়া সংরক্ষণে লবণ মাখিয়ে রাখা হচ্ছে। এবার কোরবানির পশুর চামড়া কিনে বড় মহাজনদের অপেক্ষায় রয়েছেন আড়তদাররা। উপজেলার সর্বত্র এবারেও কোরবানির পশুর চামড়া অনেক কম দামে কেনাবেচা হয়েছে। 

এতে গত বছরের চেয়ে এবার চামড়া সংগ্রহ হয়েছে বেশি। যেখানে সান্তাহারেই গত বছর সাড়ে ৪হাজার পিস চামড়া সংগ্রহ হয়েছিল, সেখানে এবছর চামড়া সংগ্রহ হয়েছে ৫হাজার পিস। অর্থাৎ এবার ৫শ চামড়া বেশি কেনা হলেও তাঁদের চোঁখে মুখে যেন দুশ্চিন্তার ছাপ। কারন ট্যানারি মালিকেদের কাছ থেকে গত ৪বছর আগের দেয়া চামড়ার ৫০ভাগ টাকা এখনো তুলতে পারেননি তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চামড়ার দাম কম হওয়ায় আড়তদাররা ফড়িয়াদের কাছে থেকে গত বারের চাইতে এবার বেশি চামড়া সংগ্রহ করেছেন। যেসব চামড়া বিভিন্ন স্থান থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এখন সেগুলো লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখা হচ্ছে।

সান্তাহার পৌর শহরের চামড়া গুদাম এলাকার ব্যবসায়ী জামাতুল ইসলাম জানান, গত বছর ১হাজার পিস চামড়া কিনেছিলেন, দাম কমের কারনে এবছর ১২শ পিস কিনেছেন। কিন্তু ঈদের এক সপ্তাহ পার হলেও বড় মহাজনরা তার আড়তে চামড়া কিনতে এখনো আসেননি। তাই তিনি চামড়া কিনে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন।

রবিবার দুপুরে উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের চামড়া গুদাম এলাকার আব্দুল কুদ্দুস নামের এক ব্যবসায়ীর গুদামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে কোরবানির চামড়াগুলো স্তুপাকারে রাখা হয়েছে। সেগুলো লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করা হচ্ছে। এসময় কথা হয় আব্দুল কুদ্দুসের সাথে। লোকসান থেকে কিভাবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বের হতে পারেন সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যদি পর্যাপ্ত লবণ দিয়ে তারা চামড়াগুলো সংরক্ষণ করেন তাহলে মহাজনদের কাছে থেকে সরকার নির্ধারিত দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর চামড়া সংরক্ষন না করে যদি কাচা চামড়া কম দামেই বিক্রি করে দিলে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

সান্তাহার চা বাগান এলাকায় দারুল উলুম মাদরাসার হিসাব রক্ষক মকতেব আলী জানান, এবারে এলাকাবাসীরা কোরবানির পশুর ৩৬৫টি গরু, ২৭৩টি ছাগল ও ৩৩টি ভেড়ার চামড়া দান করেছেন। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক ছিল বড় মাপের চামড়া। এবার চামড়ার দাম বেশি পাওয়া যাবে না তাই চামড়াগুলো খুব দ্রুত বাঁকিতেই বিক্রি করা হয়েছে। তবে গরুর চামড়ার দাম ধরেছে গড়ে ৪৫০ টাকার মতো। এছাড়া ছাগল ও ভেড়ার চামড়াগুলো দাম না করেই স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীর কাছে দিয়েছেন।

এছাড়া বাবু লাল ও রুস্তুম আলীসহ বেশ কয়েকজন আড়তদার জানান, এবারের কোরবানির মৌসুমে সরকার গত বছরের মতো গরুর কাঁচা চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকার বাইরে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। খাসির কাঁচা চামড়ার দাম সারা দেশে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। সেই হিসেবে একটি বড় গরুর চামড়ার দাম দাঁড়ায় ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। নির্ধারিত মূল্যে চামড়া কিনেও লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন। 

তবে তাঁরা বলছেন- লবন ও শ্রমিকের মজুরি খরচ বাদ দিয়ে পুঁজি উঠবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। আর যদি সঠিক সময়ে ও সঠিক দামে বেচা না যায় তাহলে নির্ঘাত লোকসান গুনতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন